মোঃফেরদাউছ মিয়া,
পলাশবাড়ী,প্রতিনিধিঃ
সংবাদ সম্মেলন করে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন কুমার নারায়ন ও সোহেল রানা নামের দুই যুবক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর পলাশবাড়ী উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে মহল্লাদার ও দফাদার নিয়োগ করা হয়। ঐ নিয়োগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঠিক তদন্ত চেয়ে সোহেল রানা ও কুমার নারায়ন নামের দুই যুবক,গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর সোহেল রানা নামের এক ভুক্ত ভুগি পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ করেন।এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ ডিসেম্বর রাত ১০ টায় অপর এক ভুক্ত ভোগি কুমার নারায়ন সোহেল রানা নামের ঐ ভুক্তভোগি যুবককে সাথে নিয়ে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হলে জনৈক এক সাংবাদিক বলেন, ইউএনও’র অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে দেয়া হবে না। এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ হলে সোহেল রানা ও কুমার নারায়নকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধুমকি দিয়ে সেই সংবাদ সম্মেলন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়।
এই ঘটনায় পলাশবাড়ীতে তোলপাড় শুরু হয়েছে । অনেকেই বলছেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর চাপা দিতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান পলাশবাড়ীতে কর্মরত সাংবাদিকদের একাংশকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত লিখিত বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংবাদিক বলেন, পলাশবাড়ীর ইতিহাসে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধা প্রদানের ঘটনা এই প্রথম ঘটলো। এটি গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিপরীত। একাধারে এই কর্মকান্ডকে ফ্যাসিস্ট কর্মকান্ড বলেও আখ্যা দেন তিনি।
পলাশবাড়ীর সিনিয়র সাংবাদিক ও পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব সভাপতি শাহ আলম সরকারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, “প্রেসক্লাব এমন একটি জায়গা যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ এবং সকল শ্রেণী পেশা ও রাজনৈতিক দলের মানুষের আসার অধিকার রয়েছে। গতকালের এই ঘটনায় সার্বজনীন খ্যাত এই প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।”
একই ব্যাপারে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক ফেরদাউছ মিয়া বলেন, মানুষ যখন তার অধিকার হারিয়ে সব জায়গায় গিয়েও তার প্রতিকার পায় না, তখন শেষ ভরসার জায়গায় এসে আশ্রয় গ্রহণ করেন। আর সেই শেষ ভরসার জায়গাটি হলো প্রেসক্লাব। গতকাল যে দুই যুবককে সংবাদ সম্মেলন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।