এস,আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট।
মহান বিজয় মাস উপলক্ষে লালমনিরহাটে
সদরের বড়বাড়ীতে শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গনে, বউ জামাই মেলা উদযাপন পরিষদ – ২০২৪ এর উদ্যোগে আজ (১৬ই ডিসেম্বর) বিকেলে পনের দিনব্যাপী শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলার উদ্বোধন করেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু।
১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
অনুষ্ঠিত বউ জামাই মেলাকে কেন্দ্র করে একই সাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে মৎস্য উৎসব ও শীতের পিঠা উৎসব।
তাই মেলায় থাকছে বিরাট মৎস্য ও পিঠার স্টল । সেই সাথে থাকছে অন্যান্য প্রসাধনী পণ্যের স্টল। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী বউ-জামাই মেলার প্রথম দিনেই উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। গলায় মালা ও শাড়ি পড়ে মেয়ে-জামাই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করেছেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ও আশপাশের জেলা থেকে দর্শনার্থীরা মেলায় যোগ দিয়েছেন। মেলায় হরেক রকমের পিঠা ও নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় প্রতিদিন সকালে মৎস্য উৎসব ও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে পিঠা উৎসব।
মেলা উপলক্ষে সদরের উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এসেছেন মেয়ে ও জামাই। গলায় মালা ও লাল শাড়ি পড়ে নতুন রূপে সেজে-গুজে মেয়ে-জামাই এসেছে মেলায়। তারা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য কিনছে বড় মাছ ও নানান রকমের মিঠা। নতুন জামাই বাড়িতে আসবে বলে শ্বশুরদের ও কিনতে হচ্ছে বড় বড় মাছ। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, অনেক আশা নিয়ে মাছ ও পিঠা নিতে এ মেলায় এসেছি। কিন্তু বিক্রেতারা মাছ ও পিঠার দামে হাঁকাচ্ছেন বেশি।
তবে দাম যাই হোক গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য মেলায় আসা বউ ও জামাই পছন্দ মতো মাছ ও পিঠা কিনে শ্বশুরবাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছেন। বিক্রেতারা বলছেন আড়তেই দাম চড়া। এ কারণে পরিবহন খরচ নিয়ে এই মাছগুলোর বিক্রি করতে হয়। মেলায় বিক্রি বেশি হয় তাই লাভ কম করি। পিঠা বিক্রেতারা বলছেন, সব জিনিসেরই দাম বেশি হওয়ায় এ বছর পিঠা দাম একটু বাড়াতে হয়েছে।
মেলা আয়োজক কমিটির আহবায়ক এ বি এম ফারুক সিদ্দিকী ও সদস্য সচিব নাজমুল হুদা লিমন জানান, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বউ-জামাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। জামাই মেলা থেকে বড় মাছ কিনে শ্বশুরবাড়ি যাবে আর হরেক রকম পিঠা খাবে। এছাড়াও নতুন প্রজন্মের শিশুরা বিলুপ্ত প্রায় অনেক প্রজাতির মাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে।
সব মিলিয়ে গ্রাম-বাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই মূলত এ ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান,এই মেলাটির তাৎপর্য হলো এ অঞ্চলের জামাইরা বৌ নিয়ে সকাল বেলায় এই মাছের মেলায় আসেন। বড় বড় মাছ নিয়ে শশুড় বাড়িতে যাবে। শাশুড়ী দুপুরের রান্না করবেন। শশুড় শাশুড়ী ও তার অন্যান্য আত্নীয় স্বজন মাছের তরকারি দিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। খেয়ে আবার বিকেলে পিঠে মেলায় আসবেন। রাত পর্যন্ত চলবে বিভিন্ন গ্রামীণ নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।