মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুরের গাংনীতে দুর্নীতিবাজ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে গাংনী উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন ষোলটাকা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা।
এসময় কৃষক ও জেলা যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দাল হক এবং ষোলটাকা গ্রামের কৃষক সামছুল হক বলেন, গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন যোগদান করার পর থেকে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অফিস পরিচালনা করে আসছেন,
তিনি গাংনী কৃষি অফিসে ২০২৩ সালের শুরুতে যোগদানের পর থেকে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জিম্মি করে দূর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
বিসিআইসি ডিলারদের সাথে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে বিএডিসি ও সাব ডিলারদের মাধ্যমে সরকারী সার কালো বাজারে বেশি দামে বিক্রয় করে আসছেন,সার না পেয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। বর্তমান সরকারকে বাধা গ্রস্থ করতে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরী করছে।
ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে রাসায়নিক সার, পারিবারিক পুষ্টি বাগানের অর্থ, কৃষি খামার যন্ত্রপাতি (মেশিনারীজ) বিক্রয়, বিভিন্ন কৃষি প্রনোদনাসহ প্রদর্শনী প্লটের কেলেংকারী ও নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে কৃষি কর্মকর্তার দূর্নীতি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সাধারন কৃষক সহ সচেতন মহল।
দীর্ঘ ১৬ বছর এক টানা আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার কারনে তাদের অনুগত বিসিআইসি ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে কালো বাজারে বেশি দামে সার বিক্রয় করছেন।
প্রকৃত কৃষকদের সার না দিয়ে চুরি করে বাহিরে বিক্রয় করছেন। অবিলম্বে আওয়ামীলীগ পন্থী ডিলারদের বাতিল করে নিরপেক্ষ ডিলার নিয়োগের দাবী করেছেন কৃষকরা।
স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামীলীগের অনুগত ডিলারগণ সারের কৃত্রিম সংকট আছে বলে কৃষকদের হয়রানি করছেন।অতি তাড়াতাড়ি ডিলার সংস্কার না করলে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
সরকারিভাবে গাংনী উপজেলায় কোন সার সংকট না থাকলেও চাষিদের সাথে প্রতারণা শুরু করেছেন এখানকার ডিলারগণ।
গাংনী উপজেলায় সর্ব মোট ডিলার রয়েছেন ১৩৯ জন এর মধ্যে বিসিআইসি ডিলার রয়েছেন ১২ জন ও বিএডিসি ডিলার সংখ্যা ৩৮ জন, সাব ডিলারের সংখ্যা ৮৯ জন, সাব ডিলার ও বিএডিসি ডিলারা সার কালো বাজারে বেশি দামে বিক্রয় করছেন।
এব্যাপারে বিসিআইসি ডিলার শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারী ভাবে আমরা উত্তোলন করে সাব ডিলারদের সরবরাহ করছি। তারা চাষীদের নিকট সঠিক ভাবে সার বিক্রয় করছেন না, যার কারনে সারের সংকট হচ্ছে।গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেনের নির্দেশে আমরা তাদের সরবরাহ করছি। সার মনিটরিং অফিসার হলেন উপজেলা কৃষি অফিসার তার সাথে কথা বলেন,
এব্যাপারে গাংনী বাজারের বিএডিসি ডিলার জামাল হোসেন জানান, সাব ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরী করেনি, বরং তাদের কারনে ইউনিয়নের কৃষকরা সার পাচ্ছে।তিনি আরও বলেন, বিসিআইসি ডিলারদের নামে বেনামে অনেক সাব ডিলার আছে তারাই সংকট তৈরী করে অন্যদের নামে দোষারোপ করছেন।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস ইমরান হোসেন জানান,সারের কোন সংকট নেই।বিসিআইসি ডিলাররা সার উত্তোলন করে বিএডিসি ও সাব ডিলারাদের মাঝে সরবরাহ করছেন,সার চাষীরা কি কারনে পাচ্ছেনা খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। অনিয়ম হলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে মেহেরপুর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান,সারের কোন সংকট নেই, আমরা কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নাই, আমি বা আমার কোন কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তার প্রমান দেন। যদি কোন ডিলার অনিয়ম করে তাহলে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানববন্ধনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, সরকারী ভাবে সারের কোন সংকট নেই। যদি কোন ডিলার বেশি দামে সার বিক্রয় করে তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হামিদুল ইসলাস
মেহেরপুর প্রতিনিধি