চট্টগ্রাম স্টাফ রিপোর্টার মোঃ জিহান
চট্টগ্রাম জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই সাতকানিয়া উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে ইটভাটা। সেসব ভাটায় কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট অথচ এই বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং এসি ল্যান্ড বলেন আমাদের সাথে কাট পোড়ানো এবং মাটি খেকোদের সাথে কোন আপোষ নেই, আপনাদের কাছে এই বিষয়ে যদি প্রমাণ থাকে উল্লেখ করতে পারেন। অথচ সচেতন মহল বলেন ইট ভাটায় কাট পোড়ানোর কারণে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল। আর এসব ইট ভাটায় ইট প্রস্তুতির জন্য বেশিরভাগ মাটি সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন ফসলি জমি ও পাহাড়ের মাটি কেটে অথচ প্রশাসন বলছেন তাদের সাথে মাটি খেকোদের সাথে কোন আপোষ নাই ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছেও সঠিক তথ্য নেই অথচ সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখিত বক্তব্যে বলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী সাতকানিয়া উপজেলায় ইট ভাটা ৫৬ টি অথচ ইট ভাটা মালিকদের হিসেব অনুযায়ী ৭৩ টি সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন ৩টি ইট ভাটায় কার্যক্রম বন্ধ অন্যদিকে সচেতন মহল বলেন ৭৩ টি ইট ভাটার মধ্যে ৪৬ টি অবৈধ এ সকল অবৈধ ইটভাটা গুলো বন্ধ করতে হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ দিলে ও কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না পরিবেশ অধিদপ্তর কিন্তু মাঝেমধ্যে এসব ভাটা বন্ধে অভিযান চালানো হয়, জরিমানাও করা হয়। তবে এরপরও থামে না ইট ভাটার কার্যক্রম এই বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং এসি ল্যান্ড বলেন ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রসিকিউশন প্রয়োজন ।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধ বা উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ২০২২ সালে একটি রিট করা হয়। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের মার্চে হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দেন। গত বছরের ১৫ মার্চের ওই নির্দেশনা অনুসারে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবৈধ ১ হাজার ৮৪টি ইটভাটা বন্ধ বা অপসারণ করতে হবে।চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিভাগীয় কমিশনারদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইট ভাটায় মাঝেমধ্যে নামে মাত্র অভিযান চালানো হয়, কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থাকে। এরপর সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং এসিল্যান্ড কে ম্যানেজ করে আবারও শুরু হয় ইট উৎপাদন অথচ সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন এসি ল্যান্ড, ইউএনও কে ম্যানেজ করে লিখেছেন এইটা লিখা ঠিক হয়নি সচেতন মহল বলেন উনি যতই শাক দিয়ে মাছ ডাকুক না কেন এভাবেই চলে আসছে যুগের পর যুগ থেকে। অভিযানের বিষয়ে এসি ল্যান্ড বলেন পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কিছুদিন আগেও তো এওচিয়া তে অভিযান করেছে ঢাকা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট এসেছিলেন আপনাদের আরও তথ্য প্রয়োজন হলে উনাদের সাথে কথা বলতে পারেন পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বর্তমানে রেকি চলছে কোন কোন ভাটায় মামলা আছে সে বিষয় এসি ল্যান্ড আরও বলেন আমি উল্লেখ করেছি স্থানীয় প্রশাসন যে পরিবেশ অধিদপ্তর এর প্রসিকিউশন ছাড়া ইট ভাটা আইনে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনা।এছাড়াও আমাদের সাথে কাট পোড়ানো এবং মাটি খেকোদের সাথে কোন আপোষ নেই, আপনাদের কাছে এই বিষয়ে যদি প্রমাণ থাকে উল্লেখ করতে পারেন । অথচ বান্দাহীন ভাবে যেইখানে অবৈধ ইট ভাটা চলছে সেইখানে আর কোন প্রমাণের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন না সচেতন মহল। সচেতন মহল আরও বলেন এই অভিযান লোক দেখানো চাড়া আর কিছুই নয় ঢাকা থেকে কি সব সময় ম্যাজিস্ট্রেট আসতে পারবে। প্রতি বছরের তুলনায় এই বছর কাঠ খড়ি দিয়ে এইসব ইটভাটা ইট পোড়ানো হচ্ছে আরও বেশি এই বিষয়ে এসি ল্যান্ড এবং ইউএনও বলেন আমরাও ২বার অভিযান করেছি । আর ইট পোড়ানোর জন্য ইট ভাটার মালিকরা পুর্ববর্তি বছর গুলির ন্যায় এবারেও জ্বালানী হিসেবে কাঠ খড়ি দিয়ে পোড়াচ্ছে। এ জন্য ইটভাটার মালিকগন গত কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার মন কাঠখড়ি সংগ্রহ করে তাদের ইট ভাটার নিদৃষ্ট স্থানে মজুদ করে ইট পোড়াচ্ছে। এখনও কাঠ খড়ি সংগ্রহ অব্যহত রয়েছে। আইনের তোয়াক্কা না করে কাঠখড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে পোড়ানো হচ্ছে ইট। আর এ ভাবেই চলতে থাকবে ইট পোড়ানোর পুরো মৌসুম।
এবারেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করবেন কি না এ নিয়ে সচেতন মহল সন্দিহান। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকলেও, তা মানা হচ্ছে না। ইট পোড়ানোর মৌসুম আসতেই আবার চালু করা হয়েছে অবৈধ ইটভাটাগুলো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ইউনিয়নে অর্ধশত ড্রাম চিমনি অবৈধভাবে ইট ভাটা গড়ে উঠেছে।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বনাঞ্চল উজাড় করে ট্রাক,ঢেম্পার, পিকআপ যোগে কাঠ এনে ইট ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অশাধু কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও এবং এসি ল্যান্ড কে ম্যানেজ করে ইট ভাটার মালিকরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক ড্রাম চিমনি ইট ভাটা দেখা গেছে সরেজমিনে। ইট ভাটা মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়লার দাম বাড়তি থাকায় লাকড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
আর এসব ইটভাটা তদারকি করার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বন বিভাগ,স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলে ও কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না । কিন্তু তাদের রহস্যজনক নীরবতার কারণে সাতকানিয়া উপজেলায় অধিকাংশ ইটভাটা মালিক এসব আইনের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার কথা থাকলে ও নিরবতা পালন করেছেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও এবং এসি ল্যান্ড এবং চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর।