ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় লাইসেন্সবিহীন তিনটি ইটভাটায় অবাধে কাঠ,খরি,এবং বাঁশের মুড়া পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার অন্যান্য ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা পোড়ালেও এ তিনটিতে তা মানা হচ্ছে না। এর ফলে এলাকার শত শত গাছপালা কাটার পাশাপাশি ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়। এদিকে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর কারণে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া আশপাশের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হরিপুর উপজেলায় মোট সাতটি ইটভাটা থাকলেও চলমান রয়েছে ছয়টি। এর মধ্যে তিনটি ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। তবে এসব ইটভাটার কোনোটিরই লাইসেন্স বা পরিবেশ ছাড়পত্র নেই।
গত কাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার যাদুরানী বাজারসংলগ্ন ভেটনা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পাশাপাশি স্থানে দুটি ইট ভাটা দুটিতে অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে করে কাঠ নিয়ে এসে ইটভাটার পাশে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে শ্রমিক দিয়ে ইটভাটায় তোলা হয়। জানা গেছে, সোনালিকা ব্রিক ফিল্ড ও শুভ ব্রিক ফিল্ড নামের ইটভাটা দুটির মালিক দুই ভাই। তাঁরা হলেন হরিপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও তাঁর ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর বশির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ এলাকার একাধিক কৃষক জানান, (ইটভাটার মালিকেরা) অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় কৃষিজমির মাঝে ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। প্রশাসন থেকে শুরু করে কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলে না। তাই স্থানীয় কৃষকেরাও ক্ষতি মেনে নিয়ে চুপ রয়েছেন। তাঁরা আরও বলেন, অন্য ইটভাটায় কয়লা পোড়ানো হলেও এ দুটিতে ঠিকই কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।
অপরদিকে উপজেলার বটতলাসংলগ্ন নয়াটলি গ্রামের মেসার্স আর বি এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ইটভাটাতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এটি কৃষিজমির মাঝে অবস্থিত। এর মালিক হরিপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম।
সরেজমিনে দেখা গেছে , এই ইটভাটার চিমনিটি তুলনায় অনেক ছোট হওয়ায় এর ছড়ানো ধোঁয়ায় দুর্গন্ধ অনেক। ইটভাটার আশপাশের বাসিন্দারা বলেন, এলাকাজুড়ে সব সময় এক ধরনের গন্ধ থাকে। এই ইটভাটার কারণে চারপাশের পরিবেশ খারাপ হয়ে গেছে। এর মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলছে না।
এ বিষয়ে আব্দুর বশিরকে মুঠো ফোনে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন,গোটা জেলা জুড়ে প্রায় সব ভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে । লাইসেন্স না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ইটভাটার মালিকেরা বলেন, অন্যান্য ইটভাটা যেভাবে চলছে, আমারটাও সেভাবেই চলছে।
এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো যাবে না। যদি পোড়ানো হয় আমি ব্যাবস্তা নিব। আপনারা বলেছেন আমি বিষয়টি দেখবো তবে আজকে আমি ব্যাস্ত আছি সময় মতো ব্যাবস্তা নেওয়া হবে।