ওসমান গনি,চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চান্দিনা মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯১ সনে এসএসসি পাস করা বন্ধুদের সমন্বয়ে গঠিত বি ৯১ কো-অপারেটিভ সোসাইটি । এই এই সংগঠনের উদ্দেশ্য হলো সবার সাথে সবার বন্ধুত্বের দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করা। এ সংগঠনের উদ্যোগে সিলেট জেলার বিভিন্ন এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখা হয়। সংগঠনের সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান । এই বছর আনন্দ ভ্রমণের টিম লিডার হিসেবে কাজ করেন আবু তাহের। গত ২৮ নভেম্বর রাত ১২ টার সময় দেশের বিভিন্ন জায়গা হতে সংগঠনের সকল সদস্যরা এক এক করে সবাই এসে জড়ো হয় ঢাকার চিটাং রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে।রাত ১২:৩০ ঘটিকায় দুইটি মাইক্রোবাস যুগে সংগঠনের সকল সদস্যরা সংগঠনের নামে খচিত টি-শার্ট গায়ে দিয়ে তারা সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা করে। তারপর দিন (২৯ নভেম্বর ) সকাল ছয়টার সময় তারা সিলেট শহরে পৌঁছে, সেখানে গিয়ে সবাই ফ্রেশ হয়ে ফজরের নামাজ আদায় করে সকালের নাস্তা পানি খেয়ে তারা যাত্রা শুরু করে জাফলং এর উদ্দেশ্যে , সেখানে সাদা কালো পাথর দেখার জন্য সবাই ১০টায় পৌঁছে যায়। বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত ভারতের উঁচু উঁচু পাহাড় গুলো দেখা যায় যেন কোন কালো মেঘে ঢেকে আছে। শীতকালের কুয়াশার মতো , যা, দূর থেকে দেখলে মনে হয়, যেন বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। পাহাড়ের পাদদেশে বাংলাদেশ সীমান্তে খরস্রোতা নদীতে স্বচ্ছ পানি বরফের মতো হিমশীতল ঠান্ডা এত টলটলে পরিষ্কার যাতে পানির নিচে মাটি এবং বিভিন্ন পাথর ও ছোট ছোট মাছ দেখা যায়, যা দেখে দর্শকদের মন আনন্দে উল্লাসে ভড়ে ওঠে ।
সাদা কালো পাথর কিছুক্ষণ দেখার পর নৌকায় রওনা দেওয়া হয় খাসিয়া পল্লীতে, এখানে ঘুরে ঘুরে দেখা হয় খাসিয়া সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা মান এবং তাদের সংস্কৃতি। যেখানে খাসিয়া সম্প্রদায় বসবাস করে এবং তাদের পাশের হয়েছে চায়ের বাগান আর সুপারি বাগান, সুপারি গাছে ধরে আছে মিষ্টি পান, চা বাগানের পাশে চা বিক্রেতারা প্রসেস করা চা পাতা নিয়ে বসে আছে বিক্রির জন্য। পিকনিকে যাওয়া দর্শক ও দর্শনার্থীরা সেখান থেকে তারা তাদের মনের মত এবং ভেজালমুক্ত চা পাতা কিনতে পারে। সেখানে খুব কম সময় ঘোরাফেরা করে। এটা দেখা শেষ করে সাদাকালো পাথর যেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সেখানে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ লোকদের জন্য প্যাকেজ ভিত্তিক খাবার হোটেল। এসব হোটেলের সকলে দুপুরে খাওয়া শেষ করে দুপুরের নামাজ আদায় করে সবাই আবার রওনা দেয় সিলেট শাহপরান ও শাহজালাল এর মাজারের উদ্দেশ্যে, রাত্রে নয়টার দিকে সবাই প্রথমে যায় হযরত শাহপরান এর মাজার জিয়ারত করে তারপর তারপর তারা রওনা দেয় হযরত শাহজালাল এর মাজার দেখতে এবং জিয়ারত করতে সেখানে দুই মাজার দেখতে দেখতে রাত্র হয়ে যায় ৯ টায় । টা দশটা তখন সবাই হোটেলে আবার রাতার রাতের খাবার খেয়ে তাদের সবাই রাতে ঘুমানোর জন্য চলে যায়। তারপর দিন ৩০ নভেম্বর খুব ভোরে ঘুম থেকে সবাই ফজরের নামাজ আদায় করে স্থানীয় হোটেল থেকে নাস্তা প্যাকেট করে নিয়ে গাড়িতে চড়ে রওনা দেয় তারা ভোলাগঞ্জ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য। সকাল ১১ টার দিকে ভোলাগঞ্জে গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সবাই নাস্তা পানি খেয়ে পাথরের হিম শীতল পানিতে গোসলের উদ্দেশ্যে কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে নৌকায় চড়ে সেখানে চলে যায়। সেখানে গিয়ে সকল বন্ধুরা অন্যান্য দর্শনার্থীদের দেখে মনের আনন্দ উল্লাসে তারাই পানিতে নেমে আনন্দ উল্লাস করে থাকে, যদিও সেখানে পানি কম নিচে পাথর খুব সতর্কতা অবলম্বন করে শুয়ে সেখানে সাঁতার কাটে এবং পানিতে ডুব দিয়ে গা ভিজিয়ে নেয়।
বেলা দুইটার দিকে সেখানে ঘুরাফিরা শেষ করে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার রওনা হয় লালাখাল এলাকার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। দেখা যায় যথেষ্ট পরিমাণ দর্শনার্থী সেখানে একটা মরা গাঙ্গের মতো রয়েছে পানি কম কিন্তু স্রোত বেশি। সেখানে থেকে কখনো কিছু সময় অপেক্ষা করে রাতারগুল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য সবাই চলে যায়। সেখানে কিছু সময় অপেক্ষা করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পথিমধ্যে আদায় করে নেয় মাগরিবের নামাজ। নামাজ শেষ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, সিলেটের কোন স্থানে একটি মসজিদে তারা সবাই সম্মিলিতভাবে এশারের নামাজ আদায় করে। রাতের খাবার খায় ভৈরবে এসে এক হোটেলে। ঢাকায় এসে পৌঁছে মাত্র চারটার দিকে। ঢাকা আসার পর গাড়ি থেকে নেমে সবাই নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং পরের খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেছে সবার সুস্থ দেহে বাড়িতে পৌঁছেছে।
ওসমান গনি
চান্দিনা, কুমিল্লা।