শুভ্র মজুমদার, কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর ব্যস্ত সড়ক ও বাজারে দিনের পর দিন দেশের পতাকা বিক্রি করছেন নুরে আলম। ফরিদপুরের এই মানুষটির হাতে সর্বদা থাকে সবুজ জমিনে লাল সূর্যের পতাকা। ছোট-বড় নানা আকারের পতাকা বিক্রি করেই চলে তার জীবিকা। জীবিকার তাগিদে তিনি কালিহাতীতে আসলেও, তার এই কাজে মিশে আছে দেশপ্রেম আর পতাকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
নুরে আলমের চোখে ক্লান্তি থাকলেও তার মুখে হাসির কমতি নেই। তিনি বলেন, “পতাকা বিক্রি করেই সংসার চালাই। স্বাধীনতার মাস আর বিজয় দিবসে বিক্রি একটু ভালো হয়। বছরের অন্য সময় খুব একটা বিক্রি হয় না, কিন্তু এই কাজ ছাড়তে মন চায় না।” ১০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন আকারের পতাকা বিক্রি করেন তিনি।
নুরে আলমের পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও সন্তানরা। তাদের লেখাপড়া ও সংসার চালাতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে পতাকা বিক্রি করেন। বিজয় দিবস ও জাতীয় দিবসের মতো উপলক্ষে বিক্রি বাড়লেও, বছরের অন্য সময়ে আয় কমে যায়। তবুও তিনি আস্থা হারান না।
নুরে আলমের চোখে দেশের পতাকা শুধু একটি কাপড়ের টুকরো নয়। তিনি বলেন, “দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এই পতাকা। আমি গর্বিত, কারণ এই পতাকাই আমাকে রোজগার দেয়। এটি আমার আশা আর জীবনযুদ্ধের সঙ্গী।”
তিনি চান, জাতীয় পতাকার সম্মান যেন কেবল বিশেষ দিনেই সীমাবদ্ধ না থাকে। সারা বছর মানুষ যেন দেশকে ভালোবাসে এবং দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করে।
নুরে আলমের মতো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দেশের পতাকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের এই সংগ্রাম আমাদের মনে করিয়ে দেয়, পতাকার মর্যাদা রক্ষা করাও এক ধরনের দেশসেবা। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার দায়িত্ব।
দেশপ্রেম আর সংগ্রামের এই গল্পে নুরে আলমের জীবন আমাদের নতুন করে শেখায় দেশকে ভালোবাসার অর্থ।
শুভ্র মজুমদার
কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি