চন্দন মিত্র দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুর ৬আসনের (বিরামপুর,নবাবগঞ্জ,ঘোড়াঘাট,হাকিমপুর)সাবেক সংসদ সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫অক্টোবর )সকাল সাড়ে দশটায় নিহত রশিদুল ইসলামের মামা বাদী হয়ে শিবলী সাদিকসহ ১১৩জনের নাম উল্লেখ করে বিরামপুর থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
নিহত রশিদুল ইসলাম(২৫) দিনাজপুর বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নের দক্ষিন কাটলা (ধানহাটি)গ্রামের মৃত নুরুল হুদার ছেলে।
মামলার বাদী মোঃ বিপ্লব আলম(বিলু ৪৭) কাটলা ইউনিয়নের উওর দাউদপুর এলাকার মৃত সাহের উদ্দিন সরকারের ছেলে এবং নিহত রশিদুল ইসলামের মামা।
গত ২০২২ সালের ৫জানুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিরামপুর থানার ২নং কাটলা ইউনিয়নের কাটলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে ১২ কিঃমি দক্ষিনে ঘটনাটি ঘটে।
মামলার এজাহার ভুক্ত অন্যান্য আসামীরা হলো ২নং কাটলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুস আলী(৪৫),মোঃ এমাজ উদ্দিন (৩৫),মোঃ ডলার ডন(,৩০),মোঃ লিয়াকত আলী টুটুল(৫০),মোঃ রহমত আলী (৫৮),মোঃ গুলজার হোসেন ঝড়ু(৫৮),মোঃ খোরশেদ আলম মানিক( ৪০),মোঃ মুকুট(৩৫),মোঃ রুহুল আমিন(৫০),মোঃ জীবন(৩০),মোঃ মেসবাহুল মন্ডল(৪০),মোঃ মামুনুর রশীদ (৪৭),মোঃ মর্তুজা( ৪০)সহ মোট ১১৩জনের নাম উল্লেখ করে ২৫০থেকে ৩০০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে বিরামপুর উপজেলাধীন ২নং কাটলা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে গত ২৮সেপ্টেম্বর ২১ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত ভোটে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হিসেবে ইউনুস আলী ও আনারস প্রতীকে প্রার্থী হিসেবে নাজির হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।নাজির হোসেনের আনারস প্রতীকের পক্ষে মোঃ রশিদুল ইসলাম সক্রিয় কর্মী হিসেবে ভোটে অংশগ্রহণ করে তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালায় । ভোট গ্রহণ শেষে নৌকা প্রার্থী বিভিন্ন অনিয়ম এবং জালিয়াতির মাধ্যমে জয়লাভ করেন।পরবর্তীতে গত ২০২২সালের ৫জানুয়ারী নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান ইউনুস আলীর পক্ষে কাটলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক উপস্থিত হন।সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি বিকাল ৩টায় শুরু হয় এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয়।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে রশিদুল ইসলাম কাটলা বাজারে অবস্থা্ন করার সংবাদ মামলার ২নং আসামী কাটলা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুস আলী পাওয়ামাত্র তিনি উক্ত সংবাদ মামলার ১নম্বর আসামী সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিককে জানান রশিদুল ইসলাম আনারসের পক্ষে নৌকা বিপক্ষে কাজ করেছে। তিনি এ কথা শুনার পরেই রশিদুল ইসলামকে ধরে আনার আদেশ দেন ।তার হুকুমে মামলার এজাহারভুক্ত ৩থেকে ৩৫ নং আসামী কাটলা বাজারের সরকারি গোডাউনের পাশ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রশিদুল ইসলামকে ধরে কাটলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাংস্কৃতিক ঞ- মামলার এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামীদের হুকুম দিয়ে বলে রশিদুল ইসলামকে নৌকার বিপক্ষে ভোট করার সাধ চিরদিনের জন্য মিটাইয়া দাও।হুকুম পাওয়ামাত্র সকল আসামীগন অনুষ্ঠান স্থলে থাকা প্যান্ডেল নির্মান কাজের জন্য পরে থাকা বাঁশের টুকরা,ও লোহার রড দিয়ে রশিদুল ইসলামের শরীরের বিভিন্ন অংশে বেদম মিটাইতে থাকে।রশিদুল ইসলাম আসামীদের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অনুষ্ঠানের স্কুল মাঠে ছোটাছুটি করে পালানোর চেষ্টা করলে ১নং আসামী সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক পুনরায় হুকুম দিয়ে বলে শালাকে জীবনের মত শেষ করে দাও,কোট,কাচারী,আইন আদালত আমি দেখে নিবো।এই কথা শুনা মাত্র এজাহারভুক্ত ২নং আসামী ইউনুস আলী তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে রশিদুল ইসলামের ঘাড়ের মাঝখানে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে এবং অন্যান্য আসামীরাও তাদের হাতে থাকা বাঁশ,লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে রশিদুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামীরা ক্ষান্ত হয় আর রশিদুলের রক্তাক্ত নিথর দেহ মাটিতে পরে থাকে। ঘটনাস্থলে নিহত রশিদুলের মামা মোঃ বিপ্লব আলমসহ কয়েকজন গেলে তাদের উদ্দেশ্য করে সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন এই ঘটনা নিয়ে কেউ বাড়াবাড়ি করলে তাদেরও এই অবস্থা হবে।এবং মামলার ২নং আসামী ইউনুস আলী হুংকার দিয়ে বলে রাতের মধ্যেই লাশ দাফন ন হলে পরের দিন আরো দুই তিনটা লাশ পরবে।
গটনিহত রশিদুলের মামা মোঃ বিপ্লব আলম এজাহারে এও উল্লেখ করেন আমি সহ নিহত রশিদুলের পরিবার এরকম একটি নৃশংস হত্যাকান্ড দেখেও নিজের ও রশিদুলের পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই রশিদুলের লাশ দাফন করি।যারা একজনকে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে মেরে ফেলতে পারে ,তাদের দ্বারা সবই সম্ভব।রাজনৈতিক ক্ষমতাধর ব্যক্তি হওয়ায় সেই সময় ভয়ে আমরা তখন কোন মামলা মোকদ্দমায় যাইনি।বর্তমানে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আমি সহ রশিদুলের মা ন্যায় বিচারের প্রার্থনায় থানায় এজাহার দাখিল করলাম।
বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমতাজুল হক ঢাকা টাইমস প্রতিনিধিকে বলেন গত ২২সালের ৫জানুয়ারী কাটলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রশিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ।সেই ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকসহ ১১৩জনের নাম