আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
গ্রামপুলিশ (মহল্লাদার) নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুস ৫ লাখ টাকা ঘুস গ্রহণ করেও চাকরি দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার দুপুরে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন পোষ্য কোঠায় আবেদনকারী মো. শাহীন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহীন বলেন, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদে আমার দাদা হযরত আলী গ্রামপুলিশ হিসেবে চাকরি শেষে অবসরে যান। এরপর আমার বাবা শাহ আলমকে পোষ্য কোঠায় একই পদে চাকরি দেন তৎকালীন চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী জোমাদ্দার। আমার বাবার ৪ বছর চাকরি থাকা অবস্থায় বর্তমান চেয়ারম্যান ফরাজী ইউনুস গত বছর ৭ নভেম্বর উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আমি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি (চেয়ারম্যান) আমাকে পোষ্য কোঠায় নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং আমার কাছে ৮ লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন। আমি তাৎক্ষণিক তাকে (চেয়ারম্যান) ৫ লাখ টাকা দেই। গত বছর ১৩ ডিসেম্বর তালতলী উপজেলা পায়রা সম্মেলন কক্ষে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় আমি অংশগ্রহণ করি কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ফরাজী ইউনুস আমার পোষ্য কোঠা গোপন রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুপমাকে ভুল বুঝিয়ে তার ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য রাহিমা বেগমের ছেলে রানাকে নিয়োগ দেন। আমি জানতে পেরে আমার টাকা ফেরত চাইতে গেলে চেয়ারম্যান (ফরাজী ইউনুস) আমার টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চেয়ারম্যানের ভয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি বাড়ি যেতে পারছি না। আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। দ্রুত এ নিয়োগ বাতিল করে যথাযথ কোঠা অনুসারে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাই। একইসঙ্গে আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান ফরাজী মো. ইউনুস ভয়ভীতি প্রদর্শনের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি কোনো টাকা নেইনি।
পোষ্য কোঠার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পোষ্য কোঠা সংরক্ষণ করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নিয়োগ বোর্ড। এখানে আমার কিছুই করার ছিল না।
শাহীনের বাবার চার বছর চাকরি থাকা সত্ত্বেও কিভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তালতলী থানার ওসি শহীদুল ইসলাম খান বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।