ওসমান গনি,
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:-
কুমিল্লার চান্দিনায় এক উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রীর টিফিন বক্সে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রী।ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে চান্দিনা উপজেলার চিলোড়া পূর্ব অম্বরপুর কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির অসুস্থ শিক্ষার্থী শাহিনুর আক্তার জানায়, বাড়ি থেকে টিফিন বক্সে করে দুপুরের খাবার নিয়ে এসে আমরা সেগুলো বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে রাখি। সোমবার টিফিনের সময় আমরা ওই টিফিন বক্স থেকে খাবার খাওয়ার সময় হঠাৎ বিষের গন্ধ পাই। একই সময়ে মীম ও মুন্নি নামে আরও দুইজন টিফিন বক্স খুলে বিষের গন্ধ পায়; কিন্তু তারা ভাতগুলো খায়নি। আমি কিছুটা খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে শিক্ষকরা আমাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনে। সন্ধ্যায় বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর রাতে আবারও অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে একই হাসপাতালে ভর্তি করায়।
ওই শিক্ষার্থী আরও জানায়, বেশ কিছুদিন যাবত বিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র একই বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে জড়িয়ে আমাদেরকে কুরুচিপূর্ণ কথা বলে এবং পিছন থেকে ঢিল ছুড়ে বিরক্ত করত। বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী শাহিনুর আক্তারের মা আকলিমা আক্তার জানান, বিদ্যালয়ে এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে খাবার রেখেছে শিক্ষার্থীরা সেখানেও নিরাপত্তা দিতে পারেনি শিক্ষকরা। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করে কথা বলার পর বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়িতে আছি, কথা বুঝি না। আমার লোক মারা গেছে, সেখানে যাচ্ছি। বলে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান জানান, ওই ছাত্রীকে আমরা বিষক্রিয়ার রোগী হিসেবেই চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে ওই খাদ্যদ্রব্য ল্যাব পরীক্ষা ছাড়া কোনো কিছুই বলা যাবে না। আমরা পরীক্ষার মাধ্যমেই বিষয়টি নিশ্চিত করব।
চান্দিনা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইকবাল হাছান জানান, এ ঘটনার পর শিক্ষকরা ছাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আবারো ভর্তি করার বিষয়টি আমাকে জানায়নি প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি নাজিয়া হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। কোনো শিক্ষার্থী যাতে লাইব্রেরিতে আর খাবার না রাখে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।