অরবিন্দ রায়
স্টাফ রিপোর্টারঃ
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার নরদহি গ্রামের বসু বাড়ির ১৫১ তম কালী পুজা শুক্রবার রাতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮৭৩ সাল থেকে নরদহি গ্রামের বসু বাড়ির গোবিন্দ প্রসাদ বসু প্রথম কালী পুজা শুরু করেন। এর পর থেকে এ বংশের উওরাধিকারীরা কালী পুজা করে আসছেন। এক সময় জাঁকজমক ভাবে এ কালী পুজা অনুষ্ঠিত হতো। এখন আগের মতো জাঁক জমক ভাবে কালী পুজা না হলে পুর্ব পুরুষের ঐতিহ্য পারিবারিক ভাবে তারা ধরে রেখেছেন। কালী পুজার ঐতিহ্য ধরে রাখতে রাম প্রসাদ বসু বাবুল ও শিবু প্রসাদ বসু কালী পুজা করছেন।
আদ্যাশক্তি মা কালী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ। শিবের আরেক নাম কাল এবং তার স্ত্রী কালী। কালিকা পুরান থেকে জানা যায়, দুই দৈত্যের কাছে এমনকি দেবতারাও আত্মসমর্পণ করেন। দেবলোক থেকে দেবরাজ ইন্দ্র বিতারিত হন। দেবলোক পুনরায় ফিরে পাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি আদ্যাশক্তি মা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন।
দেবী সন্তুষ্ট হয়ে আবিভূত হন। দেবীর শরীরের কোষ থেকে সৃষ্টি হয় দেবী কৌশিকী। মহামায়ার দেহ থেকে নিঃসৃত দেবী কৌশিকী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন দেবী কালীর আদিরূপ। দেবতাদের স্বর্গরাজ্য দখলের উদেশ্যে অসুরেরা যখন তান্ডব চালায়, ঠিক তখনই সৃষ্টি হয় দেবী দুর্গার।
অসুরের প্রধান, রক্তবীজ ছিল ব্রক্ষার বরপ্রাপ্ত। অসুরদের এক ফোটা রক্ত মাটিতে পড়লেই তা থেকে জন্ম নেয় একাধিক অসুর। অসুরদের ভয়ঙ্কর পরিস্হিতি মোকাবিলা করতে মা দুর্গা তাঁর ভ্রু যুগলের মধ্য থেকে মা কালীর জন্ম হয়। ভয়াবহ রুদ্রমূর্তি মা কালীর। অসুর এক এক করে সব মা কালীর হাতে বধ হতে থাকে। মা কালী অসুরের শরীর থেকে এক ফোঁটা রক্ত ক্ষরন হলেও তা জিভ দিয়ে লেহন করতে থাকেন। সবশেষে রক্তবীজকে বধ করে সমস্ত রক্ত মা কালী পান করে নেন। এক ফোঁটা রক্ত মাটিতে পড়তে দেয় না। এ ভাবেই মা কালী অসুরকে ধব্বংস করেন।
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে হিন্দু ধর্মের মানুষ কালী পূজা করে থাকেন। এই কালীপূজাকে অনেকেই দীপান্বিতা কালী পুজা বলে থাকেন। কালী পুজার রাতে শক্তির আরাধনা করা হয়।
মনের মধ্যে সকল অন্ধকার দূর করে বিশ্বের সকল মানুষের মঙ্গল কামনায় বসু পরিবার কালী পুজায় প্রার্থনা করে থাকেন। সমাজের সকল খারাপ, অসৎ ও অসামাজিক কাজ কর্ম দূর করার জন্য সনাতন ধর্মের মানুষ দেবী কালীর আরাধনা করে থাকে ।
সম্পাদক ও প্রকাশক : আজিজুর
রহমান
নির্বাহী সম্পাদক : মাহফুজুর
রহমান