মোঃ শিবলী সাদিক রাজশাহী
রাজশাহী মহানগরীর দামকুড়া থানায় অটোরিকশা চালক হত্যা মামলার আসামি মো:মাসুমকে (৩৪) র্যাব-৫ এর সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করেছে আরএমপি’র দামকুড়া থানা পুলিশ।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় রাজশাহী মেট্রোপুলিটন পুলিশের সদর দফতরে এ বিষয়ে প্রেস বিফ্রিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রেস ব্রিফিং করে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান- রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো: মাসুম আলী (৩৪) রাজশাহী মহানগরীর দামকুড়া থানার কাদিপুর ল পাড়া এলাকার মো: আব্দুস সালামের ছেলে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, রাজশাহী মহানগরীর দামকুড়া থানার বাথানবাড়ী এলাকার অটোরিকশা চালক সাজামুল গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪ টায় অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু অনেক রাত হলেও সাজামুল বাড়িতে ফিরে না আসলে তাঁর স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজন তাকে খোঁজ করতে থাকে। পরের দিন ২২ সেপ্টেম্বর সাজামুলের স্ত্রী প্রতিবেশী মাধ্যমে জানতে পারেন, দামকুড়া থানার ল পাড়া এলাকার কালু মিয়ার আম বাগানের কাছে সাজামুলের চশমা ও পায়ের স্যান্ডেল দেখতে পাওয়া গেছে। সাজামুলের স্ত্রী তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে সেখানে খোঁজাখুজি করে সাজামুলের লাশ পায়। সাজামুলকে গুরুতর জখম করে নৃশংসভাবে কে বা কাহারা হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। এ ঘটনায় সাজামুলের স্ত্রী মোসা: আজিজা বেগম দামকুড়া থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেন।
মামলা রুজুর পর দামকুড়া থানা পুলিশ উক্ত মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে গতকাল ৫ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ দুপুর পৌনে ৩ টায় র্যাব-৫ এর সহযোগিতায় দামকুড়া থানা পুলিশের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে আসামি মাসুমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জানায়, ভিকটিম সাজামুল ও আসামি মাসুম আলী পাশাপাশি গ্রামের পূর্বপরিচিত। অটোরিকশার লোভে সে সাজামুলকে হত্যা করেছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাতে সাজামুলের রিকশা ভাড়া করে। রাত আনুমানিক ১০ টায় দামকুড়া থানার ল পাড়া এলাকার কালু মিয়ার আম বাগান এলাকায় পৌঁছালে সে তার কাছে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে সাজামুলের পিঠে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে ঘটনা স্থলে লাশ ফেলে রেখে চলে যায়। ওই রাতে ছিনতাইকৃত অটো রিকশাটি নিয়ে সে পাবনার দিকে রওনা দেয়, পথিমধ্যে চন্দ্রিমা থানার বিহাসের সামনে মোহনপুর ব্রিজ থেকে পাইপটি ফেলে দেয়।
পরে পাবনায় গিয়ে সে অটোরিকশাটি তার পূর্ব পরিচিত সদর থানার মালঞ্চি এলাকার আ: রশিদের কাছে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। আ: রশিদ তাকে ৩০ হাজার টাকা দেয় এবং বাকি টাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলে দিবে বলে জানায়। এই কাগজপত্র নেওয়ার জন্য মাসুম বাড়িতে আসলে দামকুড়া থানা পুলিশ র্যাব-৫ এর সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেখানো মতে, পাবনা সদরের স্টেশন রোডের লস্করপুরে একটি অটো রিকশা মেরামত গ্যারাজ থেকে সাজামুলের অটো রিকশাটি উদ্ধার করা হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সে সাজামুলকে হত্যা করেছে মর্মে ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে।
আজ দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বিজ্ঞ আদালত সোপর্দ করা হলে আসামি মো: মাসুম আলী বিজ্ঞ আদালতে ফৌ: কা: বি: ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।