1. admin@dhakapost71.com : admin :
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

আমদানির ২১ টাকা কেজি আলু বাজারে ৭৫ টাকা

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৩ বার পঠিত

মাধবদী উপজেলা প্রতিনিধিঃ-
মোঃ শফিকুল ইসলাম (শফিক)

ভারত থেকে আলু আমদানি করতে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে ২১ টাকা ৩০ থেকে ৬০ পয়সা। পরিবহণ খরচ ও অন্যান্য খরচ এবং লাভসহ এই আলু ২৫ থেকে ২৮ টাকা বিক্রির কথা। আর পাইকার হয়ে খুচরা পর্যায়ে একই আলু ভোক্তাপর্যায়ে ৩০-৩৫ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু সেই আলু ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে কিনছেন ক্রেতারা।

বাজারে আলুর সংকট নেই। মৌসুমের শেষ দিকেও বাজারে পুরাতন আলুর সরবরাহ যথেষ্ট। অন্যদিকে নতুন আলুও বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবুও পণ্যটি নিয়ে অসাধুদের কারসাজি যেন থামছে না। খুচরা পর্যায়ে হু হু করে বাড়ছে দাম।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার আলু আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। কম শুল্কের আলু দেশের বাজারেও এসেছে। কিন্তু কমিশন বাণিজ্য সিন্ডিকেটের কারসাজিতে আমদানি করা ২১ টাকা কেজির আলু খুচরায় ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করেছে। ফলে পণ্যটি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ভোক্তা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে আমদানিকারক ও ঢাকার শ্যামবাজারের আড়তদার সিন্ডিকেট। আমদানিকারকরা কমিশনের মাধ্যমে আড়তদারদের দিয়ে আলু বিক্রি করায়। তারা দুই পর্যায়ে সিন্ডিকেট করে ২১ টাকা ৩০-৬০ পয়সার আলু আড়তদারদের ৫৫-৬০ টাকা বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে। সেই মোতাবেক আড়তদাররা এই দামে আলু বিক্রি করছেন। ফলে এই আড়তি দামের আলু পাইকারি ও খুচরা বাজারে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুরাতন আলু প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরের আলু হিমাগার পর্যায় থেকে দাম বাড়িয়ে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সেই আলু পাইকারি বাজার হয়ে খুচরা পর্যায়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগেও ৫৫-৬০ টাকা ছিল। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, কোল্ড স্টোরেজে যারা আলু সংরক্ষণ করছেন, তারা এখন দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। যে কারণে আলুর দাম বেশি বেড়েছে। এখানে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী আছেন, যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন।

মাধবদী বাজারে আলু কিনতে আসা রুনা বেগম বলেন, এক কেজি আলুর দাম ৮০ টাকা। এই এক কেজিতে আলু কয়টা উঠে? শীত আসার আগে আলুর দাম ২৫ টাকায় নেমে আসত। এবার চিত্র উল্টো। দাম কমেনি বরং বেড়ে ৭৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারে আলুর কোনো সংকট নেই। বিক্রেতারা বাড়তি দামে আলু বিক্রি করছেন।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কোনো সরকারই বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল সিন্ডিকেট ভাঙবে। কিন্তু সেটাও দেখা যাচ্ছে না। সরকার গঠনের পর চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় হঠাৎ করে কিছু পণ্যের দাম কমেছিল। তবে কয়েকদিন পরই চাঁদাবাজির হাতবদল হওয়ায় ফের পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে পুরোনো সেই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাড়িয়েছে পণ্যের দাম। এতে নাজেহাল ভোক্তা।

তিনি বলেন, পণ্যের দাম কে বাড়ায়, কারা সিন্ডিকেট করে সরকারের কাছে সব তথ্য আছে। ব্যবস্থা নিতে পারলে দাম কমবে। তবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ভর করেছে সব গাফিলতি। তিনি বলেন, গলাকাটা দাম আর কত সইবে ভোক্তা।

এ বিষয়ে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, আলুর অসহনীয় দামের কারণে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ চিত্র। আমদানিকারকরা আলু ২১ টাকায় কিনলেও কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে এই আলু ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি করাচ্ছেন। এমন প্রমাণ হাতেনাতে ধরে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। সিন্ডিকেট ভেঙে আলুর দাম সহনীয় করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2023 Dhaka Post 71
Theme Customized By Shakil IT Park