মোঃ কাউছার মিয়া
বিশেষ প্রতিনিধিঃ-
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। এই ১৪ জন হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান, দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, জুনাইদ আহমেদ পলক, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী, সালমান এফ রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলনে নির্বিচার খুন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
তাদের মধ্যে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন ১৪ জন। তাদের ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখাতে গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ওই আবেদনে শুনানির পর আদালত তাদের সোমবার হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের।
পতনের পর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়েছে ছাত্র-জনতা। আন্দোলনে কমপক্ষে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। নজিরবিহীন এই হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার ঘোষণা দেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৪ আগস্ট তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গঠন করে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করা হয় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই বিচারক হলেন- হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
নিয়োগের পরদিন দায়িত্ব নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর প্রথম বিচারিক কাজে বসেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারিক কাজের প্রথম দিনেই শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দুইটি আবেদনে করা হয় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে। দুটি আবেদনই আদালতে উপস্থাপন করে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।
তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও বিএম সুলতান মাহমুদ।